ঢাকা | ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ - ১০:৫০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

কাটাখালিতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্নতায় সড়কে শিক্ষার্থীরা

  • দৈনিক নবিন আলো প্রতিদিন
  • আপডেট: Sunday, August 11, 2024 - 6:58 am
  • Shobhan Hossain
  • পঠিত হয়েছে: 94 বার

আসাদুজ্জামান শেখ, নিজস্ব প্রতিবেদক। 

ছাত্র-গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশের প্রতি জনরোষ তীব্র আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় উর্ধ্বতন সব পুলিশ অফিসার আত্মগোপনে চলে যায় এবং কর্মবিরতি ঘোষণা করে। রাজধানীর সব থানা হয়ে পড়ে পুলিশ শূন্য। রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও নেই কোন পুলিশ। এমন অবস্থায় সারাদেশে সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসনে কাজ করছেন তারা। গত চারদিন ধরে পুলিশের অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা এসেছে। সেই সাথে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাদের এই সেবামূলক কাজ সব মানুষের কাছেই প্রশংসিত হচ্ছে। অনেকে এই সব ছাত্রছাত্রীদের পানি, জুস এবং নানান খাবার দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা সড়ক ও আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো পরিষ্কার করছেন। অনেক স্থানে সড়কের এবং বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবর্জনাও পরিস্কার করছে ছাত্র ছাত্রীরা। তাদের এই কাজ দেখে সব মানুষই ধন্য ধন্য করছেন। বলছেন যে এরাই আমাদের সোনার ছেলেই এরাই আমাদের এ দেশটাকে সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তুলতে পারবে। দেশব্যাপী ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে তরুণ শিক্ষার্থীরা সারাদেশে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় অন্যন্য নজির সৃষ্টি করেছে । গতকাল খুলনা- মোংলা কাটাখালি বাসস্ট্যান্ডের সড়কগুলোতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া স্কাউটসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীদেরও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। গতকাল কাটাখালি,লখপুর, নওয়াপাড়া,শ্যামবাগাতসহ বিভিন্ন সড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে। কাটাখালি মোড়ে সরকারি সুন্দরবর আদর্শ কলেজের  শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, আমরা আনন্দ সহকারে কাজ করছি  ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছি। মানুষ কিছুটা বিরক্তবোধ করছে। কিন্তু আমরা চাই সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা আসুক। মানুষ কিছুটা শিখে গেলে পরে এই ধারা বজায় থাকবে। শিক্ষার্থী শেখ মিকাইল হোসেন বলেন, যতদিন না ট্রাফিক পুলিশ আসে আমরা রাস্তায় থাকবো। সিগন্যালের পাশাপাশি গাড়িগুলো যেন লাইন ধরে চলে সেটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমাদের কষ্ট হচ্ছে তারপরও ভালো লাগছে মানুষকে সচেতন করা যাচ্ছে এটা ভেবে। অভিজ্ঞতাও হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এই ভূমিকায় খুশি পথচারী ও গণপরিবহনের চালকরা। তারা জানান, পুলিশ নেই কিন্ত সড়কে বিশৃঙ্খলা নেই। শিক্ষার্থীরা কাজ করে যাচ্ছে। খুব বেশি যানজট তৈরি হচ্ছে না। অনেক স্থানে শিক্ষার্থীদেরকে সাধারণ মানুষ পানি ও খাবার দিতেও দেখা গেছে।

ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি  শিক্ষার্থীরা সড়কের আবর্জনা পরিষ্কার ও দেয়াললিখন মুছে পরিচ্ছন্ন করার কাজ করছে। গতকালও  বিভিন্ন স্থানে  শিক্ষার্থীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে দেখা গেছে। তাঁরা গ্লাভস হাতে দিয়ে কোথাও সড়ক ঝাড়ু দিয়েছেন। কোথাও আবর্জনা কুড়িয়ে বস্তায় ভরেছেন। আবার শিক্ষার্থীদের অনেকে দলে দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন এলাকার দেয়াল ও সড়কদ্বীপে লেখা স্লোগান মুছে ফেলে আগের চেহারায় নিয়ে আসতে কাজ করছে। এ ছাড়া অনেক স্থানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ও পাহারা দিতে দেখা গেছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর এদেশের শিক্ষার্থীরা আবারও রাজপথে বুলেটের সামনে বুক উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে অকাতরে জীবন দিয়েছে। দেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা উপহার দেওয়ার পর সেই স্বাধীনতার সুফল জনগণ যাতে ভোগ করতে পারে তরুণ শিক্ষার্থীরা এখন সে লক্ষে কাজ শুরু করেছে। সেই তরুণরাই দেশে সৃষ্ট অরাজক পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রাণপণ চেষ্টা করছে। নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে পাহারা দিচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়ি ঘর। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় এবং ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর মানুষদের রক্ষায়ও তারা দিনরাত পাহারা দিচ্ছে। শুধু-তাই নয় এই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাই এখন রাজপথে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্যও ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। দেশের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করছে। তাদের এসব শুধু দেশের মানষ নয় সারা বিশ্ববাসী অবাক বিষ্ময়ে দেখছে আর বলছে সাবাস বংলাদেশ সাবাস। তরুণরাই এবার সোনার বাংলাদেশ গড়বে।