মোংলায় জাল দলিল তৈরী করে জমি বিক্রির অভিযোগে পৌর কাউন্সিলর সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা, আটক-৩
মাসুদ রানা, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতারণার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরী করে জমি বিক্রয়ের অভিযোগে মোংলা পোর্ট পৌরসভার এক কাউন্সিলর সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করে শুক্রবার ২৯ মার্চ দুপুরে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। মোংলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসার বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেণ। ৩ জন আটক হলেও কাউন্সিলর সহ বাকি আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা এলাকার মৃত হরসিদ রায়ের ছেলে তারাপদ রায় ও দুর্গাপদ রায়কে মালিক বানিয়ে এ দুজনের নামে পৌর মহিলা কাউন্সিলর শিউলী আক্তার, বুড়িরডাঙ্গার দ্বিজবর মন্ডলের ছেলে প্রদিপ মন্ডল ও মালগাজী এলাকার মাহবুব মাষ্টর সহ কয়েকজন মিলে ৫ একর ৫৬ শতক জমির প্রতারনার মাধ্যমে জাল দলিল তৈরী করে। ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুর¬ সড়ে ১১টার দিকে সেই জমি থেকে কিছু অংশ জমি কবলা দলিল মুলে অন্যাত্র বিক্রিয় করতে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যায় এ প্রতারক চক্রটি। সরকারী রেজিস্ট্রি অফিসের ১নং বইয়ের ক্রমিক নং-১৮৭, দলিল নং-১৮৫, খাজনা পরিশোধের রশিদ ও সকল সই মহরকৃত সকল কাগজপত্র জাল-জালিয়োতির মাধ্যমে তৈরী করে তার ফটোকপি মোংলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দেয় এ চক্রের সদস্যরা। সাব রেজিষ্ট্রার অফিসার আসামীদের দাখিলকৃত দলিল ও সরকারী সকল কাগজপত্র যাচাইকালে তা রেজিস্ট্রি অফিস এজলাসেই জাল ও ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় প্রতারক চক্রের সদস্য ভারত প্রবাসী তারাপদ রায়, দুর্গাপদ রায় ও প্রদিপ মন্ডল নামের এ ৩জনকে হাতে-নাতে আটক রাখে রেজিস্ট্রি অফিসের লোকজন। এ সময় পৌর কাউন্সিলর সহ বাকিরা ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। জাল কাগজপত্র তৈরী ও ভুয়া দলিলে জমি বিক্রির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বুধবার রাতে মোংলা সাব রেজিষ্ট্রার স্বপন কুমার দে বাদি হয়ে আটক ৩জন সহ মোংলা আঃ সামাদ তালুকদারের মেয়ে পোর্ট পৌরসভার (সংরক্ষিত ৭,৮,৯) মহিলা কাউন্সিলর শিউলী আক্তার, মালগাজী গ্রামের মোকলেজ শেখ এর ছেলে মাহবুবুর রহমান শেখ, দ্বিগরাজ এলাকার মৃত আঃ লতিফ মৃধার ছেলে ইলিয়াস মৃধা, বুড়িরডাঙ্গার বৈরাগীখালী গ্রামের সুনিল তরফদারের স্ত্রী দিপা তরফদার সহ ৭জনের নামের মোংলা থানায় মামলা দায়ের করেণ এবং আটক ৩জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন সাব রেজিষ্ট্রার অফিসার। আটক ৩ জনকে শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানায় মোংলা সহকারী পুলিশ সুপার।
মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার বরেন, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল ও অন্যান্য কাগজ পত্র তৈরী করে জমি বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন কয়েক প্রতারক। এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার রাতে সাব রেজিষ্ট্রার বাদি হয়ে ৭জনকে আসামী করে মোংলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেণ তিনি এবং আটক ৩জনকে পুৃলিশের হাতে তুলে দেন। আটকদের বৃহস্পতিবার জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানায় পুলিশের এ কর্মকর্তা।