সুন্দরবন সংলগ্ন নদী-খাল বিষমুক্ত করতে অবস্থান কর্মসুচি
মোংলা প্রতিনিধি
সুন্দরবন সংলগ্ন নদী-খাল বিষমুক্ত ও শিল্প দূষণমূক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের “ধরা”। ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজিত মোংলা শিল্প এলাকার পশুর নদীর পাড়ে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেন তারা।
সুন্দরবনে অভয়াশ্রম ঘোষিত নদী-খালে অবৈধ ভাবে মাছ ধরছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের লোকজন। সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদীতে শিল্প দূষণ ঠেকাতে না পারলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র ও বাস্তুতন্ত্র এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। এছাড়া পশুর নদীতে প্রতিনিয়ত তেল-কয়লা-ক্লিংকার বোঝাই কার্গো ও জাহাজ ডুবির ফলে নদীর স্বাস্থ্যহানি ঘটছে। নদী একটি জীবন্ত সত্তা, তাই রক্ষা করা এখনই প্রয়োজন বলে মনে করেণ স্থানীয়রা।
আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজনে সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদী পরিদর্শন ও নদী রক্ষার দাবীতে অবস্থান কর্মসুচি পালন করা হয়। এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি নদী পরিদর্শন শেষে পশুর নদী ও মোংলা নদীর মোহনায় নদী দখল মুক্ত ও দূষণমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে। মানববন্ধন ও সমাবেশের সভাপতিত্ব করেণ বাপা মোংলা আঞ্চলিক কমিটির সহ-সভাপতি মীরা মন্ডল। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোঃ নূর আলম শেখ। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাপা নেতা নাজমুল হক, তন্বী মন্ডল, মাহারুফ বিল্লাহ প্রমূখ।
সমাবেশে বাপা’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, নদীর প্রতি আমাদের সবার দায়বদ্ধতা রয়েছে। নদী বাংলাদেশের প্রান, দেশ বাঁচাতে নদী বাঁচান। তিনি আরো বলেন, প্লাবন ভূমিকে নদ-নদী খাতের প্রতি উন্মুক্ত রাখা দরকার, যাতে নদ-নদীর পানি প্লাবন এবং জোয়ার ভূমিতে পৌছাতে পারে। বাণিজ্যিক ও বেষ্টনী পন্থা নয়, নদ-নদীর প্রতি প্রকৃতিসম্মত উন্মুক্ত পন্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন। নদ-নদীর অববাহিকার বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষার মাধ্যমে এই পন্থা সেখানকার সকল প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য উপকারী বলে প্রমাণিত। উল্ল্যেখ্য ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে ব্রাজিলের কুরিতিয়া শহরে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসের পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নদীর প্রতি মানুষের করণীয় কী, নদী রক্ষায় দায়িত্ব, মানুষের দায়বদ্ধতা কতটুকু এসব বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিতে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।