ঢাকা | ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ - ৫:০২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

সিবিএ নির্বাচন নিয়ে ক্রমেই উত্তাপ্ত হয়ে উঠছে মোংলা বন্দর

  • দৈনিক নবিন আলো প্রতিদিন
  • আপডেট: Wednesday, February 28, 2024 - 1:53 pm
  • Shobhan Hossain
  • পঠিত হয়েছে: 175 বার

মোংলা প্রতিনিধি

সিবিএ নির্বাচন নিয়ে ক্রমেই উত্তাপ্ত হয়ে উঠছে মোংলা সমুদ্র বন্দর। কর্তৃপক্ষের শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বাড়ছে অসন্তোষ। ঘোষিত খসড়া ভোটার তালিকায় পদোন্নতি পাওয়া ৩ কর্মকর্তার নাম থাকায় উদ্ভুদ পরিস্থিতর সৃস্টি হয়েছে (সিবিএ) নির্বাচন নিয়ে। সংকট নিরসনে গতকাল বুধবার হা’-না, ভোটের আয়োজন করা হলেও তা হয়নি। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এদিন সকাল ১১ টায় বন্দর জেটিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের সভায় হা’-না, ভোট স্থগিত এবং ঘোষিত ভোটার তালিকায় সঘের (সিবিএ) দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ঘোণা দিলে শ্রমিক-কর্মচারীরা দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে পড়েন। ক্ষমতাসীন সিবিএ নেতা-কমীরা কেসিসি মেয়রের দেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান সহ বন্দর এলাকা সংঘের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেন সংঘের বর্তমান পরিষদের নেতৃবৃন্দরা।

অপর দিকে কর্মকর্তা হয়েও শ্রমিক-কর্মচারীদের তালিকায় নাম থাকা সাবেক সিবিএ নেতা এস এম ফিরোজ, মোঃ মোশারফ হোসেন এবং মোঃ অকিচ আলীর পক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সমর্থিত একাংশ পথাসভা করের বন্দরের শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায়। এ অবস্থায় দু’গ্রুপের মধ্যে বন্দর জুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যা সংঘাত ও সহিংসতায় রুপ নেয়ার আশংকা করছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। অপর দিকে ৩ কর্মকর্তা ইস্যুতে আইনী লড়াই করার ঘোষনা দিয়েছেন বর্তমান পরিষদের সিবিএ নেতারা। ফলে তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ মার্চ মবক’র শ্রমিক-কর্মচারী সংঘের নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধিনস্থ প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষায়াদী নিয়ে সরকার সহ মবক’র সঙ্গে কাজ করে থাকে সিবিএ। সিবিএ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে নেতৃত্ব ও ক্ষামতায় যাওয়ার তৎপরতা থাকে শ্রমিক নেতাদের। তাই আঞ্চলিকতার পাশাপাশি বছর জুড়ে চলে নানা মেরুকরন। এতে কেউ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকেছেন আবার অনেকে সটকেও পড়েছেন।
নব্বই দশক হতে কর্তৃপক্ষের অধিনে কর্মচারী হিসেবে যোগদান করন এস এম ফিরোজ, মোঃ মোশারফ হোসেন এবং মোঃ অকিচ আলী। তাদের মধ্যে ফিরোজ ও আকিচ বিভিন্ন সময় তারা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রানাধীন সিবিএ নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনের বিভিন্ন পদে কর্মচারীদের নেতৃত্বেও ছিলেন। কিন্ত বিগত প্রায় ২ বছর আগে কর্তৃপক্ষের পদোন্নতি সভায় কর্মচারী থেকে জুনিয়ার কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন হয় এ তিন কর্মচারী। কর্মচারী থেকে কর্মকর্তা হওয়ায় গত ২৩ সালের ২ জানুয়ারি মোংলা বন্দর কর্মচারী সংঘ (সিবিএ)’র সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম ফিরোজ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মোঃ অকিচ আলী ও মোঃ মোশারফ হোসেনের সদস্য পদ বাতিল করা হয়।

কিন্তু গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ সংগঠনটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা পরবর্তী প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় নাম ওঠে পদোন্নতি পাওয়া ওই তিন কর্মকর্তার। আর এ নিয়ে আপত্তি তোলেন সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীরা। খুলনা বিভাগীয় শ্রম পরিচালকের কার্যালয় ও নির্বাচন পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কাছে গনস্বাক্ষরিত লিখিত আবেদন ও আপত্তি জানান শ্রমিক-কর্মচারীদের একাংশ। এ সংকট নিরসনে শ্রম অধিদপ্তর ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বুধবার ২৮ ফেব্রুয়ারী হ’-না’ ভোটর আয়োজন করলেও তা ভেস্তে যায়। এতে দু-গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পক্ষে-বিপক্ষে-অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। যা নিয়ে তাদের মধ্যে বাড়ছে উত্তাপ ও উত্তজনা।

উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি বিষয় সিবিএ’র সাবেক নেতা মতিয়ার রহমার সাকিব বলেন, কর্মচারী থেকে কর্মকর্তায় পদোন্নিতি পাওয়ারা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কর্মচারী সংঘের সদস্য থাকার সুযোগ নেই। তারা অবৈধ সুযোগ পেয়ে সদস্য থাকলে এবং নেতৃত্বে পৌছালে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে শ্রমিক-কর্মচারীর ভবিষাতে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন, এটি সম্পুর্ন গঠনতন্ত্র বভিঃভুত কার্যক্রম বলে মনে করেণ তিনি। ২৮ ফেব্রয়ারী যে সিদ্দান্ত হয়েছে, যা কোন দিনই মোংলা বন্দর কর্মচারীরা মেনে নেবে না।

এ প্রসঙ্গে সিবিএ’র বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কাজী খোরশেদ আলম পল্টু জানান, মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী (সিবিএ)’র একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে, সেখানে সু-ষ্পষ্ট আইন রয়েছে যে, মালিক শ্রমিক কখনই এক সংগঠনের সদস্য ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চলতে পারনা। কারণ শ্রমিক সংগঠন সব সময় মালিকদের বি-পক্ষে থাকে। তাদের সংঘের সাবেক নেতা এস এম ফিরোজ সহ অপর দু’জন পদন্নতি পেয়ে কর্মকর্তা হয়েও কর্মচারির তালিকায় থাকতে আগ্রহী। কারন তারা সিবিএ’ নেতৃত্বে গিয়ে সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীদের শাসন ও শোষন করতে চাইছেন। গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কর্মকান্ডের জন্য তিনি খুলনা অঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তরের কর্তা-ব্যক্তিদের দোষারপ করছেন। আর এ নিয়ে আইনী লড়াই করার ষোষনা দেন তিনি সহ তার পরিষদের নেতৃবৃন্দরা।

এদিকে সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক (পদায়িত কর্মকর্তা) এস এম ফিরোজ বলেন, সিবিএ’ নির্বাচনী মেয়াদ অনেক আগে শেষ হলেও ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বর্তমান ক্ষমতাসীনা নোতারা। শ্রমিক-কর্মচারীরাই চাইছেন তিনি সিবিএ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করুক। তাই সংঘাত নয়, শ্রমিক-কর্মচারীরা চাইলে এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তে আসন্ন সিবিএ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের প্রস্তুতি নেয়ার কথাও জানান তিনি।

এ অবস্থায় খুলনাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তর এ সিবিএ সংগঠনটির নির্বাচন নিয়ে প্রতি দু’বছর পর পর শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা থাকলেও দুই গ্রুপের দন্ধের কারণে এখন বাড়ছে হতাশা।