শিকড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ।
খুলনা ব্যুরো প্রধান
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ২নং কুশখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে অবষ্ঠিত শিকড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানরা খানম বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাত, সেচ্ছাচারিতা, জাতীয় দিবস পালন না করা, ভবন নিলাম দিয়ে নামে মাত্র টাকা জমা দিয়ে বেশীভাগ টাকা লুটপাট, ক্ষুদ্র মেরামত, রুটিন মেন্টেইনেন্সেরম টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে না করে প্রধান শিক্ষকের পকেটে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানরা খানমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকসহ অনেকই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে ভুয়া বিল ভাউচারে ওই প্রধান শিক্ষিকা হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা। ইতিমধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস অভিযোগ দিলেও এখনোও কোন তদন্ত হয়নি। রহস্যময় ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ফলে তদন্তের এ গড়িমসি নিয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানরা খানম বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা কমিটিকে না জানিয়ে নিজে ভুয়া ভাউচার তৈরি করে আত্মসাত করেছেন, ভুয়া পিটিএ কমিট গঠন ও স্বাক্ষর জালের মাধ্যমে বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করেছেন, স্লিপ, ফান্ড ও ক্ষুদ্র মেরামতের টাকা যথাযথভাবে খরচ করেন নি, বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনের বরাদ্দকৃত টাকা শিক্ষার্থীদের জন্য খরচ না করে ভুয়া ভাউচার দিয়ে আত্মসাত করেছেন, ওয়াসব্লক মেইনটেনেন্সের অর্থ যথাযথভাবে খরচ না করা।
শুরুতেই তিনি ল্যাপ্টব না ক্রয় করে ৪৭ হাজার’ টাকার ভাউচার করেন। আর এসব ভুয়া বিল ভাউচারে প্রায় ২-৩ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন ওই প্রধান শিক্ষিকা। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও যাতায়াতের নামেও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিজে সময় মতো স্কুলে হাজির না হয়ে উল্টো হুমকি-ধমকি দেন সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। স্কুলে নিয়মিত হাজির না হলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকে তার। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময় ফি বাবদ রয়েছে তার অবৈধ আয়ের আরেক উৎস। তার এ অনিয়মের বিষয় সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ অভিভাবকরা মুখ খুললে তাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানরা খানম বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি আকিজুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির কোনও তোয়াক্কাই করেন না। তিনি তার ইচ্ছেমত সকল কাজ পরিচালনা করেন।
এ বিষয় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খাদিজা খাতুন জানান, প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানরা খানম নানা অনিয়মের বিষয় একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। তাই ওই প্রধান শিক্ষিকা ম্যানেজিং কমিটিকে এড়িয়ে সার্বিক কার্যক্রম নিজের মতো করেই পরিচালনা করছেন।
প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানরা খানম তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল প্রকার অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন, একটি মহল তার বিরুদ্ধে নানা চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। আমার পক্ষে আমার কাছে সকল প্রকার রেকর্ড রয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা মিটিং এ উপস্থিত থাকেন না। তাই তারা আমার সম্পর্কে এ ধরনের ভুল তথ্য তুলে ধরছেন।
ওই স্কুল শিক্ষিকার অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানরা খানম অনিয়মের বিষয় প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হবে। চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২য় পর্বে চোখ রাখুন